মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর চিন্তা করছে নাকি নাসা! চাঁদের বুকে সর্বপ্রথম মানুষও প্রেরণ করেছে নাকি নাসা! টেলিস্কোপ, আ্যাপোলো-১১ ও নাকি তৈরি করেছে নাসা! মহাকশে রকেট উৎক্ষেপনও নাকি নাসা করেছে! সবকিছুতেই নাসার কৃতিত্ব! তাহলে কে বা কারা এই নাসা? এটা কি কোনো মানুষের নাম নাকি কোনো কোম্পানির নাম?
আপনার
মাথায়ও কি এরকম চিন্তার উদ্ভব ঘটে? যদি তাই হয় তাহলে নিশ্চয়ই প্রশ্নগুলোর উত্তর
খুঁজে ফিরছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি হতে যাচ্ছে আপনার জন্য বিশাল এক
উপহার। কেননা আজকে আমরা উপরের সবগুলো প্র্রশ্নের উত্তর দেবো। পাশাপাশি আমরা জানবো
নাসার সকল কার্যক্রম।
আপনি যদি আগ্রহী হোন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন আজকের আলোচনা শুরু করা যাক!
নাসা
কি?
নাসা (NASA) হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন ও গবেষণামূলক একটি বিমানচালনবিদ্যা ও মহাকাশ সংস্থা। যাদের কাজ হচ্ছে পৃথিবির বা মহাবিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করা।
নাসা অর্থ কি?
নাসা হচ্ছে একটি সংক্ষিপ্ত শব্দ যার পূর্ণরুপ “ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন”। সংক্ষেপে নাসা (NASA) বলা হয়। বাংলায় অর্থ করলে দাড়ায় জাতীয় বিমানচালনবিদ্যা ও মহাকাশ সংস্থা।
নাসা এর পূর্ণরূপ কি
NASA (National Aeronautics and Space Administration) (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেরশন)
নাসা সৃষ্টির ইতিহাস
অনেক আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ গবেষণার জন্য একটি স্বাধীন সংস্থা গঠনের চিন্তা করে আসছিল যারা বিমানচালনাবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করবে। সেই লক্ষে ১৯৫৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ন্যাশনাল অ্যাডভাইসরি কমিটি ফর অ্যারোনটিক্স (নাকা) এর পরিবর্তে নতুন করে একটি মহাকাশ সংস্থা তৈরি করে। যার নাম দেয়া হয় নাসা (NASA)।
নাসার
কাজ কি?
এতক্ষণে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন নাসা হচ্ছে আমেরিকার একটি সিভিল স্পেস এজেন্সিযারা মহাকাশ সম্পর্কে গবেষণা করে সারা বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। মঙ্গলে মানুষ পাঠানো বা কক্ষপথে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের কাজগুলো সচরাচর করে থাকে।এছাড়াও তারা পৃথিবী, বায়ু, সূর্য এবং সৌরজগত সম্পর্কে অবাক করা তথ্য দিয়ে থাকে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই সংস্থাটি বিমানচালনবিদ্যায় উন্নতি সাধনের লক্ষে সর্বদা গবেষণা করে থাকে। নাসার গবেষণার মধ্যে অন্যতম স্পেস শাটল মিশন এবং স্কাইল্যাব স্পেস স্টেশন মিশন, অ্যাপোলো মুন ল্যান্ডিং মিশন এবং স্পেস ওরিয়ন স্পেসক্রাফট লঞ্চ সিস্টেম।
নাসা প্রতিষ্ঠিত হয় কবে?
স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মহাকাশ গবেষণা নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতা চলছিলো। ঠিক সে সময়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫৮ সালে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তৈরী করে। প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ারের কাছে থেকে মূলত নাসার ধারণাটি এসেছিলো। তিনি দেখিয়েছিলেন রাশিয়ার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আমেরিকার নিজস্ব মহাকাশ গবেষণা থাকা প্রয়োজন।
নাসা কোন দেশের সংস্থা?
নাসা (NASA) মূলত ইউনাইটেড স্টেট বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি
সংস্থা।
নাসার বর্তমান প্রধান কে?
নাসা (NASA) ন্যাশনাল আ্যারোটিক্স আ্যান্ড স্পেস আ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর বর্তমান প্রধান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টিভ জুর্কজিক(Steve Jurczyk) ।
নাসা এর সদর দপ্তর কোথায়?
নাসা (NASA) ন্যাশনাল আ্যারোটিক্স আ্যান্ড স্পেস আ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর সদর দপ্তর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত।
নাসার বিজ্ঞানীদের বেতন কত?
ধারনা করুন তো, যারা এত মেধার অধিকারী তাদের মেধার মূল্যায়ন করা কি আদৌ সম্ভব? তারপরও নাসা তাদের বিজ্ঞানীদের বেতন দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তারা যেসব বিজ্ঞানীরা সেখানে কাজ করে তাদের বেতন ৬৬ হাজার ডলার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ডলার পর্যন্ত দিয়ে থাকে। তবে দক্ষ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিজ্ঞানীদের বেতন কাঠামো আরো বেশি।
নাসার ওয়েবসাইট এর নাম
অন্যান্য সংস্থার মতো নাসাও তাদের নিজস্ব অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সকল তথ্য আপডেট করে থাকে। নিম্নের ওয়েবসাইটটি তারা ব্যবহার করে থাকে। নাসার ওয়েবসাইট – https://www.nasa.gov
এখন পর্যন্ত নাসা যে সফলতাগুলো পেয়েছে
নাসার অবিস্মরণীয় কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৫৭ সালে স্যাটেলাইট এক্সপ্লেয়ার-১ উৎক্ষেপণ ফলাফল ব্যর্থ, ১৯৯০ সালে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ সৃষ্টি, ১৯৯৯ সালে চন্দ্রা এক্স-রে অবজারভেটরি নামক কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি, ১৯৭০ সালে কিউরিওসিটি রোভার-মার্স এক্সপ্লেরার, এছাড়াও আ্যাপোলো-১১ সহ আরো অনেক সৃষ্টি।
নাসার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কি?
ইতিমধ্যে নাসা পৃথিবীর পরিবেশের উপর গবেষণা করে কক্ষপথে উপগ্রহ চালু, বিভিন্ন ধরনের রকেট উৎক্ষেপণসহ নানাবিধ আশ্চর্যজনক জিনিস সম্পন্ন করেছে। তবে ভবিষ্যতে তারা এসবের পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করার পরিকল্পনা করেছে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত তারা নানা গ্রহ ও উপগ্রহ নিয়ে গবেষণা করবে। তারা ইতিমধ্যে শুক্র নিয়ে কাজ শুরু করেছে। সেখানে তারা গবেষণা করতে গিয়ে “ফসফাইন” নামক এক প্রকারের গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে, সে কারনে তারা সেখানে তথ্য উতঘাটনের জন্য আগ্রহী হয়ে পড়েছে।
সমাপনী
ভাবতে
পারেন নাসা হয়তো শুধু মহাকাশ গবেষণাতেই ব্যস্ত থাকেন হয়তো, তাহলে আপনার ধারনাটি
সম্পূর্ণ ভুল। কেননা
তারা পৃথিবী বিজ্ঞান এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও গবেষণা করে থাকে। নাসা
সম্পর্কে যদি আপনার আরো বেশি জানার আগ্রহ থাকে তাহলে আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলটি
পড়ুন।সেখানে আমরা নাসা এখন
পর্যন্ত কি কি গবেষণামূলক কাজ করেছে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আর্টিকেলটি
যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা কোনো প্রশ্ন করার থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান
কমেন্ট টি করতে ভুলবেন না।
2 Comments
আলহামদুলিল্লাহ লেখাগুলি অনেক সুন্দর হইছে। অনেক কিছু জানতে পারলাম।
ReplyDeleteআপনারা একটা নাসা কোম্পানি খুলেননা কেন?
ReplyDelete